বরেন্দ্র নিউজ ডেক্স: দিল্লির হায়দ্রাবাদ হাউজে শনিবার (৫ অক্টোবর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বাদশাহী পোলাও থেকে শুরু করে চেন্নাইয়ের মালপোয়াসহ হরেক রকমের আড়ম্বরপূর্ণ ভেজিটেরিয়ান খাবার দিয়ে মধ্যাহ্নভোজে আপ্যায়ন করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তার আগে দুই শীর্ষ প্রধানের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় জনগণের উন্নয়নে ফেনী নদীর পানি উত্তোলন ও বন্দর ব্যবহারসহ একাধিক চুক্তি এবং সমাঝোতা সই হলেও বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের চাহিদা তিস্তার পানি বন্টন এবং রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে কার্যকর কোনো ঘোষণা আসেনি।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে দিল্লির হায়দ্রাবাদ হাউজে শনিবার আন্তরিক পরিবেশে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর আড়ম্বরপূর্ণ ভেজিটেরিয়ান একাধিক খাবার দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মধ্যাহ্নভোজে আপ্যায়ন করেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক বিশ্বের কাছে দৃষ্টান্ত
খাবারের টেবিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পছন্দের খাবারই ছিল বেশি। উত্তর ভারতের বিখ্যাত খাবার দইয়ে ডোবানো পাপরি, বাদশাহী পোলাও, উত্তর ভারতের আরেক বিখ্যাত মাশরুমের পদ, শাহী ডাল এবং চেন্নাইয়ের মালপোয়াসহ প্রচুর আইটেম ছিল। সবশেষ ছিল কফির চুমুক। আর এই সময়ে বাজছিল পুরানো দিনের জনপ্রিয় গান ‘তুমকো দেখাতো ইয়ে খেয়াল আয়া’, ‘একলা চলোরে’, ‘রাঘুপাতি রাঘব’, ‘রাম রতন ধান পায়ো তো’, ‘ওহ সাম কুছ আজিব থি’ ইত্যাদি।
এর আগে হায়দ্রাবাদ হাউজে দুই শীর্ষ প্রধানের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করতে ওই বৈঠকের পর দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে ৭ বিষয়ে চুক্তি ও সমাঝোতা সই করেন দুই দেশের সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিরা।
আরও পড়ুন: কী থাকছে ভারতের সঙ্গে পানি বৈঠকে?
শীর্ষ বৈঠকের পর ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় যৌথ বিবরণী প্রকাশ করে। বিবরণীতে বলা হয়েছে, দুই দেশের সম্পর্ক বিশ্বের যে কোনো দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত। যৌথ ইশতেহার থেকে জানা গেছে, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় জনগণের উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশ ভারতকে গ্যাস সরবরাহ, ফেনী নদীর পানি উত্তোলনসহ বন্দর ব্যবহারের জন্য রাজি হয়েছে। ত্রিপুরার সাবরুম অঞ্চলের পানির চাহিদা মেটাতে ১ দশমিক ৮২ কিউসেক পানি বাংলাদেশের ফেনী নদী থেকে ভারতকে উত্তোলনের অনুমতি দিয়ে দুই দেশের মধ্যে সমাঝোতা স্মারক সই হয়েছে। এতে নয়াদিল্লি ঢাকার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে।
অন্যদিকে বাংলাদেশের দীর্ঘ দিনের আকাঙ্ক্ষা তিস্তার পানি বন্টন চুক্তিতে কোনো অগ্রগতি হয়নি। যৌথ ইশতেহারে ভারত আগের মতই অতি দ্রুত এই বিষয়ে সমাধান আসবে বলে মন্তব্য করেছে।
আরও পড়ুন: ফেনী নদীর পানি দিয়ে ত্রিপুরার চাহিদা মেটাতে চায় ভারত
যৌথ ইশতেহার থেকে আরও জানা গেছে, রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী সক্রিয় কোনো মন্তব্য করেননি। এমন কি ভারত রোহিঙ্গা শব্দও উচ্চারণ করেনি। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠী হিসেবে বলা হয়েছে। মিয়ানমার সরকারও রোহিঙ্গা শব্দ ব্যবহার করে না। এ ছাড়া রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মিয়ানমারকে চাপ দেওয়া সংক্রান্ত কোনো তথ্য যৌথ ইশতেহারে খুজে পাওয়া যায়নি। তবে রোহিঙ্গাদের জন্য আরও মানবিক সহায়তা (ত্রাণ) দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে দেশটি।
আরও পড়ুন: নয়াদিল্লির আগ্রহে দ্বিপক্ষীয় সফরে ভারত যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী
পানি-প্রতিরক্ষায় ঢাকার অবস্থান কী, জানাতে পারল না মন্ত্রণালয়
সারাবাংলা/জেআইএল/পিটিএম
Leave a Reply